7/Slider/slider-tag <center><div id='bp_recent'></div><div class='bp_footer'><small><a id='bp_recent_link' target='_blank' href='http://www.bloggerplugins.org/2011/09/recent-posts-thumbnails-blogger-widget.html?utm_src=bp_recent' style='padding: 1px 0px 0px 19px;text-decoration:none;'><a href='http://www.bloggerplugins.org/?utm_src=bp_recent' target='_blank' title='blogger widgets'></a></a></small></div> <script style='text/javascript' src='http://bloggergadgets.googlecode.com/files/recentposts_orig.js'></script> <script style='text/javascript'> var numberOfPosts = 5; var showPostDate = false; var showSummary = false; var titleLength = 0; var showCommentCount = false; var showThumbs = true; var showNoImage = true; var imgDim = 125; var imgFloat = 'left'; var myMargin = 5; var mediaThumbsOnly = true; var showReadMore = false; </script> <script src='https://hindudarshon.blogspot.com/feeds/posts/default?max-results=5&orderby=published&alt=json-in-script&callback=bprecentpostswiththumbnails'> </script></center>

পৃষ্ঠাসমূহ

১০ জানুয়ারী, ২০২২

অগ্নি দেবতা

অগ্নি

   বেদের সূচনাই হয়েছে অগ্নি দেবতাকে স্তুতির মাধ্যমে। ঋগ্বেদে বলা হয়েছে অগ্নি যজ্ঞের পুরোহিত এবং দীপ্তিমান। অগ্নি দেবগণের অহবানকারী ঋত্বিক এবং প্রচুর রত্নধারী। তিনি দেবতাদের উদ্দেশ্যে উৎসর্গকৃত হবি দেবতাদের কাছে পৌছে দেন। তিনি দেবতাদের মুখ সরূপ। তিনি মর্তে্যর দেবতা এজন্য তাঁকে অনেক নিকটে অতি সহজেই পাওয়া যায়। বিভিন্ন দেবতার যাগ-যজ্ঞ করতে অগ্নি আবশ্যক। পুরোহিত ছাড়া যেমন যজ্ঞ অসম্ভব তেমনি অগ্নি ছাড়াও যজ্ঞ অসম্ভব। তাই অগ্নিকে বলা হয়েছে যজ্ঞের পুরোহিত। ঋগ্বেদ মতে অগ্নি তিন লোকেই বিরাজমান। সূর্য রূপে তিনি দ্যুলোকে, বিদুৎ রূপে তিনি অন্তরীক্ষে এবং বাড়বানল রূপে তিনি সমুদ্রমধ্যে অবস্থান করেন। ঋগ্বেদের দশম মণ্ডলে ত্রিত ঋষি বলেছেন অগ্নিই অসৎ অর্থাৎ সৃষ্টির পূর্বেও তিনি ছিলেন আবার তিনি সৎও বটে অর্থাৎ সৃষ্টির পরেও তিনি আছেন। তিনি আকাশের উপরে সূর্য রূপে জন্মেছেন। অগ্নিই আমাদের অগ্রে জন্মেছেন। অগ্নিই যজ্ঞের পূর্ববর্তীকালে অবস্থিত ছিলেন। তিনি বৃষও বটে আবার গাভীও বটে অর্থাৎ তিনি নারী পুরুষ উভয় রূপে বিদ্যমান। আবার তিনি বলেছেন অগ্নিকে আমি পিতা ও আত্মীয় জ্ঞান করি। আগ্নিই ভ্রাতা, আগ্নিই চিরকালের বন্ধু।

অগ্নি

    শাস্ত্রে অগ্নির বিভিন্ন নামের উল্লেখ আছে, যেমন বৈশ্বানর, বি‎‎হ্ন, রোহিতাশ্ব, হুতভূজ, অজহস্ত, অনল, পাবক, তোমরধর, রোহিতাশ্ব, ছাগরথ, সপ্তজিহ্বা প্রভৃতি। ঋগ্বেদে আছে অগ্নি যুব, যবিষ্ঠ (বলবান), ঘৃত-পৃষ্ঠ, নীল-পৃষ্ঠ, হিরণ্যকেশ, জ্বালাকেশ, পিঙ্গলশ্মশ্রম্ন, তীক্ষ্ণদংষ্ট্রা, হিরণ্যদন্ত প্রভৃতি। ঋগ্বেদে অগ্নির জন্ম সম্পর্কে বলা হয়েছে মাতরিশ্বা দ্যুলোক থেকে অগ্নিকে পৃথিবীতে এনেছেন। আবার দুইটি অরণিকাষ্ঠের ঘর্ষণেও অগ্নি জন্মলাভ করেন। সেজন্য অগ্নিকে বলা হয় প্রমন্থ এবং অরণিকাষ্ঠে দ্বয়কে বলা হয় অগ্নির মাতা। জুহু নামক চামচে করে অগ্নি দেবতাকে ঘৃত উৎসর্গ করা হয় বলে জুহুকে অগ্নির মুখ বা জিহ্বা বলা হয়েছে। উপনিষদে অগ্নির যে সপ্ত-জিহ্বার উল্লেখ পাওয়া যায় তা হল কালী, করালী, মনোজবা, ধূমা, লোহিতা, স্ফুলিঙ্গিনী ও বিশ্বরুচি। বেদ অনুসারে অগ্নির তিনটি রূপ বিদ্যমান, যথা দক্ষিণাগ্নি, গার্হপত্য অগ্নি ও আহবানীয় অগ্নি। এজন্য তাঁকে ত্রিজিহ্ব, ত্রিমূর্দ্ধা, ত্রিতনু প্রভৃতি বলা হয়েছে। অগ্নি বৈদিক দেবতা কিন্তু পুরাণেও অগ্নির পরিচয় পাওয়া যায়।

    পুরাণে অগ্নির রূপ কল্পিত হয়েছে। আদিত্য পুরাণ মতে অগ্নির ভ্রু, শ্মশ্রু, কেশ ও চক্ষু পিঙ্গল বা তামাটে বর্ণের। তাঁর অঙ্গ ও জঠর (পেট) লোহিত বা লাল বর্ণের। তিনি রুদ্রাক্ষ ও উপবীতধারী এবং ছাগ তাঁর বাহন। পুরাণে অগ্নির স্বাহা নামক এক স্ত্রিরও পরিচয় পাওয়া যায়। অগ্নি সবকিছু ভোজন করেন বলে তাঁকে সর্বভূক বলা হয়। তবে আগে তিনি সর্বভূক ছিলেন না, আগে তিনি কেবল হবি ভোজন করতেন। মহাভারতের আদি পর্বে অগ্নির সর্বভূক হওয়ার কাহিনী বর্ণিত আছে। কাহিনীটি এরকম পুলোমাকে এক রাক্ষস বিবাহ করতে চেয়েছিল, কিন্তু পুলোমার পিতা বিবাহে সম্মতি না দিয়ে মহর্ষি ভৃগুর সাথে কন্যাতে বিয়ে দেন। পুলোমা গর্ভবতী হওয়ার পর রাক্ষসটি অগ্নিকে জিজ্ঞাসা করে, এই কন্যা কার পত্নী? অগ্নিকে সাক্ষী রেখে ভৃগু পুলোমাকে বিবাহ করেছিলেন তাই অগ্নি উত্তরে বললেন যে, পুলোমা ভৃগুর পত্নী। কিন্তু ঐ রাক্ষস বিবাহের পূর্বের পুলোমাকে মনে মনে পত্নী রূপে কল্পনা করেছিল, তাই রাক্ষসটি অগ্নির উত্তরে সন্তুষ্ট হল না এবং বরাহ রূপ ধারণ করে পুলোমাকে হরণ করল। হরণের সময় পুলোমার গর্ভপাত হয়ে চ্যবণ ঋষির জন্ম হয় এবং সেই শিশু চ্যবণের তেজে রাক্ষস দগ্ধ হয়। কিন্তু অগ্নি রাক্ষসকে পুলোমার পরিচয় দিয়েছিলেন বলে ভৃগু অগ্নিকে “সর্বভূক” হওয়ার শাপ দেন। তাই ভৃগু শাপ দেওয়ার কারণে অগ্নি অভিমান করে যজ্ঞে আহুতি গ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত নেন। তখন ব্রহ্মা তাকে বোঝালেন, তুমি সদা পবিত্র এবং শুধু তোমার গুহ্যদেশের শিখা ও মাংসভক্ষক শরীর সর্বভূক হবে আর মুখে যে আহুতি দেওয়া হবে তাই দেবগণ কতৃর্ক গৃহীত হবে।

    মহাভারতের আর এক স্থানে আছে যে, অগ্নি শ্বেতকী রাজার যজ্ঞে অপরিমিত ঘৃত পান করায় ক্ষুদামন্দা রোগে ভোগেন। তিনি রোগমুক্তির জন্য ব্রহ্মার উপদেশে এবং কৃষ্ণ ও অজুর্নের সহায়তায় খাণ্ডব বন দহন করেন। অগ্নির খাণ্ডব-দহনে কেবলমাত্র ছয় জন বেঁচে ছিলেন। তাঁরা হলেন মন্দপালের ঔরসে ও জরিতার গর্ভে জন্ম নেওয়া চারটি শিশু, তক্ষকপুত্র অশ্বসেন এবং নমুচির ভ্রাতা ময়। হরিবংশে  উল্লেখ আছে অগ্নি কৃষ্ণ বস্ত্রাবৃত, ধূম্রপতাকা ও জ্বলন্ত বর্শাযুক্ত। তাঁর চারটি হস্ত রয়েছে। তাঁর বাহন ছাগ এবং তিনি লাল বর্ণের অশ্বচালিত রথে ভ্রমণ করেন। বরাহ পুরাণে আছে, ব্রহ্মা প্রজাসৃষ্টির জন্য ব্যাকুল হলেন কিন্তু অনেক ভেবেও সৃষ্টি বিষয়ে কোন সিদ্ধান্তে পৌছাতে না পারায় তাঁর ক্রোধ হল। সেই ক্রোধ থেকে অগ্নি জন্মলাভ করলেন। জন্মগ্রহণ করেই তিনি পিতা ব্রহ্মাকে দগ্ধ করতে উদ্যত হলে ব্র‏‏হ্মা তাঁকে বললেন “তুমি হব্য-কব্য ভোজন কর”। সেজন্য অগ্নির নাম হল হব্য-বাহন।

    শাস্ত্রমতে, গার্হপত্য অগ্নিকে সাক্ষ্য রেখে উপনয়ন, বিবাহ, বৃক্ষরোপণ, জলাশয় প্রতিষ্ঠা পভৃতি কার্য সম্পাদন করা বিধেয়। যেহেতু অগ্নি হল দেবতাদের প্রতিনিধি, তাই অগ্নিকে সাক্ষ্য রাখার অর্থ সমস্ত দেবতাকেই সাক্ষ্য রাখা। এই দৃষ্টিকোণ থেকেই হিন্দুরা আজও অগ্নিকে সাক্ষ্য রেখে বিবাহাদি শুভকার্য সম্পাদন করে।

    এবার আসা যাক অগ্নির বাহন প্রসঙ্গে। বিভিন্ন দেবতার যে বাহন রয়েছে তা আসলে কাল্পনিক ও রূপক। কিছু বিশেষ ভাব ব্যক্ত করার জন্য প্রত্যেক দেবতার সাথে একটি করে বাহন কল্পনা করা হয়েছে। বাহন অর্থ বহন করে যে। প্রশ্ন হল বাহন কি বহন বা ধারণ করে? দেবতাদের বৈশিষ্ট্য যে প্রাণী ধারণ করে তাকেই দেবতাদের বাহন বলে। ছাগলের পরিপাক শক্তি খুব ভাল। সবকিছু খেয়ে সে হজম করতে পারে। তাই বলা চলে ছাগল সর্বভূক। যেহেতু অগ্নি সর্বভূক এবং প্রাণিকুলের মধ্যে ছাগলও সর্বভূক, তাই ছাগলই অগ্নির বাহন হিসেবে উপযুক্ত।

এই ওয়েবসােইটের সকল ধর্মীয় পোস্ট  পড়ার জন্য এই <পোস্ট দেখুন> অংশে ক্লিক করুন

আরও পড়ুন

অষ্টাঙ্গ যোগ
হিন্দুদের চতুরাশ্রম 
পূজা পদ্ধতি
ঈশ্বরতত্ত্ব 
বৈদিক যজ্ঞ 
রামায়ণের কাহিনী 
মহাভারতের কাহিনী 
অদ্বৈতবাদ ও দ্বৈতবাদ 
মহাপুরাণ 
হিন্দুধর্মে নিষিদ্ধ খাদ্য ও ভোজনবিধি 
দেবী দুর্গার স্বরূপ 
হিন্দুধর্মে সৃষ্টিতত্ত্ব 
হিন্দুদের ধর্মশাস্ত্র 
নবপত্রিকা ও কলাবৌ 
হিন্দু দেবতা 
সৌর ও গাণপত্য 
গীতা, চণ্ডী ও মনুসংহিতা 
উপনিষদ বা বেদান্ত 
শারদীয় দুর্গাপূজা ও নবরাত্রি


0 comments:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন