যোগ
যে পদ্ধতিতে ঈশ্বরের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করা হয় তাকে
যোগ বলে। যম, নিয়ম, আসন, প্রাণায়াম, প্রত্যাহার, ধারণা, ধ্যান ও সমাধি এই আট
প্রকার অঙ্গ বিশিষ্ট যোগই অষ্টাঙ্গ-যোগ। এই অষ্টাঙ্গ-যোগকে রাজযোগও বলে। ঋষি
পতঞ্জলি অষ্টাঙ্গ-যোগ বা রাজযোগের প্রবর্তক। ঋষি পতঞ্জলি বিরচিত সূত্রকে পতঞ্জল
যোগসূত্র বলে। পতঞ্জল যোগসূত্রে সবিস্তরে অষ্টাঙ্গ-যোগের বর্ণনা আছে। নিচে উক্ত অষ্টাঙ্গ-যোগের
আটটি অঙ্গের বর্ণনা দেয়া হল-
যম
অষ্টাঙ্গ-যোগ সাধনার প্রথম অঙ্গ যম। যম বলতে মূলত ইন্দ্রিয়-সংযমকেই বোঝায়। ঋষি পতঞ্জলি প্রবর্তিত যোগসূত্রে আছে- অহিংসা, সত্য, অস্তেয় (অচৌর্য), ব্রহ্মচর্য ও অপরিগ্রহ এ পাঁচটি গুণকে যম বলে। কায়-মন-বাক্যে কোন প্রাণীকে বধ না করা বা ব্যথা না দেওয়াকে অহিংসা বলে। যথাজ্ঞাত বিষয়কে যথাযথ প্রকাশ করার নাম সত্য। অন্যের ধন চুরি না করাকে অস্তেয় বলে। বীর্য-ধারণ করাকে ব্রহ্মচর্য এবং প্রয়োজনের অতিরিক্ত কোন দ্রব্য গ্রহণ না করাকে অপিরগ্রহ বলে। যোগের প্রথমেই যম অভ্যাস করতে হয় কেন? অন্তরে অহিংসা প্রতিষ্ঠিত হলে অন্যের প্রতি শত্রু মনোভাব হ্রাস পায়। হৃদয়ে সত্য প্রকাশিত হলে কোন মিথ্যা ও কুকর্মকে সহজেই দূরিভূত করা যায়। সত্যবাদীর মুখ-নিঃশ্রিত বাণীও সত্য হয়। অর্থাৎ সত্যবাদী ব্যক্তির মধ্যে সততার শক্তি সঞ্চারিত হয়। ফলে তিনি যা বলেন, তাই সত্য হয়। অচৌর্য বা অস্তেয় প্রতিষ্ঠার দ্বারা যোগী সমুদয় ধন-রত্নাদি লাভ করে থাকেন। ব্রহ্মচর্য প্রতিষ্ঠিত হলে বীর্য বা শক্তি লাভ হয়। অপরিগ্রহ দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত হলে পূর্বজন্মের স্মৃতিও স্মরণ করা সম্ভব হয়।নিয়ম
অষ্টাঙ্গ-যোগ সাধনার ক্ষেত্রে শৌচ, সন্তোষ, তপস্যা, স্বাধ্যায় ও ঈশ্বর প্রণিধান এই পাঁচটি গুণকে নিয়ম বলে। শৌচ বলতে বাহ্যিক ও আভ্যন্তরীণ শুদ্ধতা বোঝায়। সণান, আচমন প্রভৃতির দ্বারা বাহ্যশৌচ এবং সৎচিন্তা, দয়া প্রভৃতির দ্বারা অন্তঃশৌচ সম্পন্ন করা হয়। শৌচ হতে সত্ত্বশুদ্ধি, সৌমনস্য (মনের প্রফুল্ল ভাব), একাগ্রতা, ইন্দ্রিয়জয় প্রভৃতি লাভ হয়ে থাকে। সহজ চেষ্টায় যা পাওয়া যায় তাতে তৃপ্ত থাকাকে সন্তোষ বলে। সন্তোষ হতে পরম সুখলাভ হয়। শ্রদ্ধার সাথে শাস্ত্রবিধি অনুসারে ব্রত করাকে তপস্যা বলে। তপস্যা হতে দেহ ও ইন্দ্রিয়ে নানাবিধ শক্তি আসে। বেদ-বেদান্ত প্রভৃতি ধর্মশাস্ত্র নিয়মিত যথাযথভাবে অধ্যয়ন করাই স্বাধ্যায়। স্বাধ্যায়ের মাধ্যমে ইষ্ট দেবতার দর্শন লাভ হয়। ঈশ্বরের নিকট সমুদায় অর্পণ করাকে ঈশ্বর প্রণিধান বলে।আসন
অষ্টাঙ্গ-যোগ সাধনার তৃতীয় অঙ্গ আসন। যেভাবে অনেকক্ষণ স্থিরভাবে সুখে বসে থাকা যায়, তাকে আসন বলে। বিভিন্ন প্রকার আসন আছে, যথা- পদ্মাসন, সুখাসন, বীরাসন, ভদ্রাসন, ভূজঙ্গাসন প্রভৃতি। প্রাণায়াম যথাযথভাবে সম্পন্ন করার জন্য নিদিষ্ট আসন একান্ত প্রয়োজন। আসন শরীরের অঙ্গ-প্রতঙ্গগুলোকে স্থির ও শিথিল করতে সাহায্যে করে। শাস্ত্রে বলা হয়েছে, এমন স্থানে আসন পাততে হয়ে যেখানে নদীর কুলুকুল তরঙ্গ-ধ্বনি ও পাখির কুজন শোনা যায় এবং যেখানে শোরগোল ও কোলাহল থাকে না। নিয়মিত আসন অভ্যাস করলে নানাবিধ রোগব্যাধি থেকেও মুক্ত হওয়া যায়।প্রাণায়াম
নিশ্বাস ও প্রশ্বাস উভয়ের গতি সংযত করাকে প্রাণায়াম বলে। অন্য কথায় প্রাণ ও অপান বায়ুর সংযোগকে প্রাণায়াম বলে। পূরক, কুম্ভক ও রেচক এই তিনটি প্রক্রিয়া দ্বারা প্রাণায়াম করা হয়। বহিঃস্থ বায়ুকে আকর্ষণ করে দেহের অভ্যন্তরের নাড়ীগুলো পূরণ করাকে পূরক বলে। সহজ কথায় নির্দিষ্ট নিয়মে মন্ত্র উচ্চারণ করে শ্বাস ভেতরে নেয়ার নাম পূরক। অভ্যন্তরের বায়ু কুম্ভ বা কলসের মত ধারণ করাকে কুম্ভক বলে। ঐ ধারণ করা বায়ুকে বাইরে রেচন বা নিঃসরণ করাকে রেচক বলে। সহজ কথায় নির্দিষ্ট নিয়মে মন্ত্র উচ্চারণের সাথে শ্বাসতাগের নাম রেচক। প্রাণায়ামের সময় বৃদ্ধাঙ্গুলি দ্বারা ডান নাসাছিদ্র বন্ধ করে বাম নাসাছিদ্র থেকে ৪ বার ‘‘ওঁ’’ বা ইষ্ট-মন্ত্র জপ করতে করতে শাস নিতে হয়। এভাবে শ্বাস গ্রহণই পূরক। তারপর বৃদ্ধঙ্গুলি দ্বারা ডান নাসাছিদ্র এবং কনিষ্ঠা ও অনামিকা দ্বারা বাম নাসাছিদ্র বন্ধ করে ঐ শ্বাস ধরে
রেখে ১৬ বার ‘‘ওঁ’’ বা ইষ্ট-মন্ত্র জপ
করতে হয়। এভাবে শ্বাস ধরে রেখে জপ করা কুম্ভক। কুম্ভকের পর বৃদ্ধাঙ্গুলি ডান
নাসাছিদ্র থেকে সরিয়ে নিলে বন্ধ ডান নাসাছিদ্র খুলে যায় এবং ঐ পথে ধরে রাখা শ্বাস
ধীরে ধীরে ত্যাগ করার সময় ৮ বার ‘‘ওঁ’’ বা ইষ্ট-মন্ত্র জপ করতে হয়। এরকম শ্বাসত্যাগের
এই প্রকৃয়াই রেচক। ইড়া নামক নাড়ীতে পূরক, সুষুম্না নামক নাড়ীতে কুম্ভক এবং পিঙ্গলা
নামক নাড়ীতে রেচক সম্পন্ন করা হয়। পূরকের সময় ইড়া নামক নাড়ী পথে বায়ু প্রবেশ করে
এবং কুম্ভকের সময় নিমণগামী বায়ুপ্রবাহ ঊর্ধমুখী হয়ে পিঙ্গলা নাড়ী পথে বাইরে গমন
করে। উক্ত প্রাণায়ামে পূরক, কুম্ভক ও রেচক ৮। ৩২। ১৬ এবং ১৬। ৬৪। ৩২ অনুপাতেও হতে
পারে। তন্ত্রমতে দশটি চক্রের সর্বনিম্ন চক্র মূলাধারে কুলকুণ্ডলিনী শক্তি ঘুমন্ত
অবস্থায় থাকে। প্রাণায়ামের ফলে ঐ ঘুমমত্ম কুলকুণ্ডলিনী শক্তিকে জাগ্রত করা যায়। কুলকুণ্ডলিনী
শক্তিকে সহস্রার চক্রে অবস্তিত পরমাত্মারূপী শিবের সাথে মিলন ঘটাতে পারলেই সমাধি
লাভ সম্ভব।
প্রত্যাহার
প্রত্যাহার বলতে ধেয় বস্তু ব্যতীত অন্যান্য বৈষায়িক
চিন্তা প্রত্যাহার বা ত্যাগ বোঝায়। যখন ইন্দ্রিয়গণ তাদের নিজ নিজ বিষয় পরিত্যাগ
করে চিত্তের অনুগামী হয়, তখন তাকে প্রত্যাহার বলে। ইন্দ্রিয়গুলো বহির্মুখী এবং এরা
বিভিন্ন বাহ্যিক চিন্তা দ্বারা মনকে পরিপূর্ণ করে। ধরা যাক, যোগী চন্দ্র বা
সূর্যের জ্যোতির ধ্যান করবে। কিন্তু ধ্যান শুরু করলে যোগীর মনে চন্দ্র বা সূর্য
ছাড়াও বিভিন্ন চিন্তা আসতে পারে। চন্দ্র বা সূর্য ব্যতীত অন্যান্য চিন্তা বা
কল্পনাকে দূরীভূত করাই প্রত্যাহার।
ধারণা
অষ্টাঙ্গ-যোগ সাধনার ষষ্ঠ অঙ্গ হল ধারনা। চিত্তকে কোন বিশেষ বস্ত্ততে ধরে
রাখার নাম ধারণা। চিত্ত স্বভাবতই বিক্ষিপ্ত থাকতে চায়। চিত্তে বিভিন্ন ধরণের
চিন্তা, কল্পনা, অতীত-স্মৃতি প্রভৃতি এসে উপস্থিত হয়। প্রত্যাহারের মাধ্যমে ঐ সব
বাহ্যিক বিষয় দূর করে কোন একটি নির্দিষ্ট বিষয়ে (যেমন- চন্দ্র, সূর্য, অগ্নিশিখা,
কোন দেবতা বা গুরুর মূর্তিতে) মনকে নিবিষ্ট করাই ধারণা। ধারণার মাধ্যম বিক্ষিপ্ত
মন একাগ্র হয়। ফলে যোগী অমিত শক্তির অধিকারী হন।
ধ্যান
ধেয় বস্তু বিষয়ক জ্ঞান নিরন্তর একভাবে প্রবাহিত হতে থাকলে তাকে ধ্যান বলে। কোন বস্ত্ত বা বিষয়ে বেশ কিছুক্ষণ যাবৎ ধারণা করতে পারলে, সে ধারণাই ধ্যানে পরিণত হয়। সোজা কথায় অবিচ্ছিন্ন ধারণাকেই ধ্যান বলে। ধারণার সময় মন অন্য দিকে চলে যেতে পারে। কিন্তু পুনরায় মনকে ধেয় বস্তুতে স্থাপন করে কিছুক্ষণ ধরে রাখাতে পারলেই ধ্যান সম্পন্ন করা সম্ভব হবে।সমাধি
অষ্টাঙ্গ-যোগ সাধনার সর্বশেষ অঙ্গের নাম সমাধী। ধ্যান যখন সমুদয় বাহ্য-উপাধি পরিত্যাগ করে কেবল অর্থমাত্রকে প্রকাশ করে, তখন তাকে সমাধি বলে। ধ্যান গাঢ় হলে ধেয় বস্তু (যে বস্তুর ধ্যান করা হয়) ও আমি এরকম জ্ঞান থাকে না এবং চিত্ত তখন ধ্যেয় বস্তুতেই লীন হয়। সেই লয় অবস্থাকেই সমাধি বলে। কেবল সেই ধেয় বস্তু আছেন, সেরকম আভাস জ্ঞান মাত্র থাকবে আর কিছু থাকবে না, চিত্তের ধেয় বস্তুতে এরকম তন্ময়তাকেই সমাধি বলে। মূলত ধ্যানের পরিণামই সমাধি। ধ্যানের সময় সাধকের এই ভাব থাকে যে, তিনি একটি বিষয়ে চিন্তা করছেন কিন্তু সমাধির ক্ষেত্রে সে ভাবটিও থাকে না। সমাধি দুই প্রকার, যথা- সবিকল্প বা সম্প্রজ্ঞাত এবং নির্বিকল্প বা অসস্প্রজ্ঞাত। জ্ঞাত, জ্ঞান, জ্ঞেয় এই তিনটি পদার্থের ভিন্ন ভিন্ন জ্ঞান সত্ত্বেও অদ্বিতীয় ব্রহ্মবস্তুতে অখণ্ডাকারে চিত্তবৃত্তির অবস্থানকে সবিকল্প সমাধি বলে। সবিকল্প সমাধিতে চিত্ত নিরবিচ্ছিন্নভাবে ব্রহ্মবস্তু বা আত্মাতে স্থির হলেও জ্ঞাত (যোগী নিজে), জ্ঞান (ধেয় বস্ত্ত সম্পর্কিত জ্ঞান) এবং জ্ঞেয় (ধেয় বস্তু দ্বারা যে বিষয়গুলো জানা যায়) এই তিনটি বিষয়ে পৃথক চৈতন্য থাকে। জ্ঞাত, জ্ঞান ও জ্ঞেয় এই তিনটি পদার্থে ভিন্ন ভিন্ন উপলব্ধি না হয়ে অদ্বিতীয় ব্রহ্মবস্তুতে অখণ্ডাকার চিত্তবৃত্তির অবস্থানেকে নির্বিকল্প সমাধি বলে। নির্বিকল্প সমাধিতে জ্ঞাতা, জ্ঞান ও জ্ঞেয় এই তিনটি পদার্থ সম্পর্কেই যোগীর কোন পৃথক চৈতন্য থাকে না। সহজ কথায় যোগী বাহ্য-সংজ্ঞা হারিয়ে এক ধেয় বস্তুতেই নিবিষ্টি থাকেন। নির্বিকল্প সমাধিতে জীবাত্মা ও পরমাত্মার মিলন ঘটে। সমাধি-সত্মরে গিয়ে সাধক এক অনির্বচনীয় আনন্দ ও ব্রহ্মজ্ঞান লাভ করেন। সাধক সমাধি-স্তর থেকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসলে সমাধি-স্তরে কি উপলব্ধি করেছিলেন, তা স্মরণ করতে পারেন না। সুতরাং সমাধিকে ভাষা দ্বারা ব্যক্ত করা সম্ভব নয়। সমাধি স্তরে যে পৌঁছাতে পারে কেবল সেই সমাধি-স্তরকে উপলব্ধি করতে পারে।
অষ্টাঙ্গ যোগ বা রাজ যোগ ছাড়াও যোগশাস্ত্রে আরও তিন
ধরণের বিশেষ যোগ রয়েছে, যথা- মন্ত্র যোগ, হঠযোগ এবং লয়যোগ। মন্ত্রজপ করতে করতে যে
মনোলয় হয় তাকে মন্ত্রযোগ বলে। ‘‘হ’’ শব্দের অর্থ সূর্য এবং ‘‘ঠ’’ শব্দের অর্থ
চন্দ্র। তাই ‘‘হঠ’’ দ্বারা চন্দ্র ও সূর্যের সংযোগ বোঝায়। মূলত চন্দ্র দ্বারা অপান
বায়ু এবং সূর্য দ্বারা প্রাণ বায়ু বোঝায়। অতএব প্রাণ ও অপান বায়ুর একত্র সংযোগের
নাম হঠযোগ। যে যোগের মাধ্যমে চিত্তকে যে কোন পদার্থের উপর স্থির করা যায়, তাকে লয়
করাকে লয়যোগ বলে। লয়যোগ চার প্রকার, যথা- শাম্ভরী-মুদ্রা দ্বারা ধ্যান,
খেচরী-মুদ্রা দ্বারা রসাস্বাদন, ভ্রামরী-কুম্ভক দ্বারা নাদ শ্রবণ এবং যোনিমুদ্রা
দ্বারা আনন্দভোগ। লয়যোগ-সাধনা দ্বারা দর্শন, শ্রবণ ও ঘ্রাণ ইন্দ্রিয়কে অতি
শক্তিশালী করা যায়। (আমা কর্তৃক লিখিত “হিন্দুধর্মের সারকথা” নামক গ্রন্থ থেকে সঙ্কলিত)
আরও পড়ুন
Very descriptively described in this blog which is really helpful for me.
উত্তরমুছুনThanks a lot
মুছুনThank you, I’ve recently been searching for information about this subject for a long time and yours is the best I have found out so far.Iobit Uninstaller Crack
উত্তরমুছুনThanks
মুছুনআডি আডি নাপাই নিয়া অল
উত্তরমুছুননাসে হঁ এতকেটাড়ে বাং হুই আকানা বুঝতে
প্রশ্ন : অষ্টাঙ্গ যোগ
উত্তরমুছুনপ্রশ্ন : অষ্টাঙ্গ যোগ
উত্তরমুছুনউত্তরটা কি হবে আর 10নম্বারে উত্তর
???????
মুছুনধন্যবাদ
উত্তরমুছুনThis application is a strong IDE programming that gives you smart thoughts to build your foundation. So, this product upholds numerous dialects. What's more, its usefulness furnishes you with complete route documents. This program makes projects for you that utilization the most recent series 3D Coat Crack
উত্তরমুছুনI am very thankful for the effort put on by you, to help us, Thank you so much for the post it is very helpful, keep posting such type of Article.
উত্তরমুছুনAdobe Dreamweaver Crack
Winamp Pro Crack
Here at Karanpccrack, you will get all your favourite software. Our site has a collection of useful software. That will help for your, Visite here and get all your favourite and useful software free.
উত্তরমুছুনkaranpccrack
Nero Recode Crack
khub bhalo post. good article. nice
উত্তরমুছুন