7/Slider/slider-tag <center><div id='bp_recent'></div><div class='bp_footer'><small><a id='bp_recent_link' target='_blank' href='http://www.bloggerplugins.org/2011/09/recent-posts-thumbnails-blogger-widget.html?utm_src=bp_recent' style='padding: 1px 0px 0px 19px;text-decoration:none;'><a href='http://www.bloggerplugins.org/?utm_src=bp_recent' target='_blank' title='blogger widgets'></a></a></small></div> <script style='text/javascript' src='http://bloggergadgets.googlecode.com/files/recentposts_orig.js'></script> <script style='text/javascript'> var numberOfPosts = 5; var showPostDate = false; var showSummary = false; var titleLength = 0; var showCommentCount = false; var showThumbs = true; var showNoImage = true; var imgDim = 125; var imgFloat = 'left'; var myMargin = 5; var mediaThumbsOnly = true; var showReadMore = false; </script> <script src='https://hindudarshon.blogspot.com/feeds/posts/default?max-results=5&orderby=published&alt=json-in-script&callback=bprecentpostswiththumbnails'> </script></center>

পৃষ্ঠাসমূহ

১৬ ডিসেম্বর, ২০২১

দুর্গা পূজা ও নবরাত্র

 দুর্গা পূজা

   মর্ত্যলোকে প্রথম দুর্গাপূজা করেন রাজা সুরথ। পুরাকালে স্বরোচিষ মন্বন্তরে চৈত্রবংশীয় সুরথ নামক এক রাজা সমস্ত ভূমণ্ডলের অধিপতি হন। তিনি প্রজাদের নিজ পুত্রের মত ভালবাসতেন। কিন্তু তিনি কোলবিধ্বংসী নৃপতিগণের নিকট যুদ্ধে পরাজিত হন এবং দুরাত্মা অমাত্যবর্গের প্রতারণায় রাজ্য থেকে বিতাড়িত হয়ে বনে প্রবেশ করেন। তিনি ঘুরতে ঘুরতে বনের মধ্যে অবস্থিত মেধা মুনির আশ্রমে প্রবেশ করলেন। সেখানে সমাধি নামক এক বৈশ্যও উপস্থিত হলেন। সমাধি বশ্যৈর স্ত্রীপুত্রগণ তাঁর ধন আত্মসাৎ করে তাঁকে পরিত্যাগ করেছে। তাই মনের দুঃখে তিনি বনে আশ্রয় নিয়েছেন। রাজা সুরথ মেধা মুনির নিকট জানতে চাইলেন যে, রাজ্য থেকে বিতাড়িত হওয়ার পরও কেন সে রাজ্যের প্রতি এবং রাজ্যের প্রজগণের প্রতি তাঁর এত মমতা? সমাধি বৈশ্যও জানতে চাইলেন যে, তাঁর স্ত্রীপুত্র তাঁকে ত্যাগ করার পরও কেন তিনি তাদের প্রতি হিংসিত হতে পারছেন না? তখন মেধা মুনি উত্তর দিলেন, “এটা সংসারের স্থিতিকারিণী দেবী মহামায়ার প্রভাবেই ঘটে। অতএব এতে বিষ্ময় প্রকাশ করবেন না। ইনি বিষ্ণুর যোগনিদ্রা, ইনি মহামায়া, ইনি জগৎকে সম্মোহিত করে রাখেন। এই দেবী ভগবতী মহামায়া জ্ঞানীদের চিত্তও বলপূর্বক আকর্ষণ করে মোহগ্রস্থ করেন। তিনি এই চরাচর সমগ্র জগৎ সৃষ্টি করেন। এই মহামায়াই প্রসন্না হয়ে বরপ্রদা হলে মানবের মুক্তি প্রদান করেন। ইনি পরম হেতু, ইনি সনাতনী। সংসারবন্ধনের হেতুও এই দেবী, সকল ঈশ্বরের ইশ্বরী এই দেবী”।

দুর্গা

   তারপর মেধা মুনি তাঁদের দেবীর মহীমা-কীর্তন ও বিভিন্ন অসুরবধের কাহিনী শোনাতে লাগলেন। সমাধি বৈশ্য ও রাজা সুরথ মেধা মুনির নিকট মহামায়ার বৃত্তান্ত শুনে দেবীর দর্শনলাভের জন্য দেবীসূক্ত জপ করতে করতে তপস্যায় রত হলেন। তারপর তাঁরা দুজনে নদী তীরে দেবীর মৃন্ময়ী প্রতীমা নির্মাণ করে সংযত চিত্তে আহার পরিত্যাগ করে অর্থাৎ উপবাস থেকে ফুল, ধূপ ও হোমের মাধ্যমে দেবীর পূজা করতে লাগলেন। তাঁরা নিজ দেজ হতে রক্ত দ্বারা সিক্ত উপহার দেবীর উদ্দেশ্যে প্রদান করতে লাগলেন। এভাবে তিন বৎসর আরাধনা করার পর দেবী তুষ্ট হয়ে তাঁদের দর্শন দেন এবং বর প্রদান করেন। দেবীর বরে রাজা সুরথ শত্রু দমন করে তাঁর হারানো রাজ্য উদ্ধার করেন। এই সুরথ রাজাই মৃত্যুর পর আবার সাবর্ণি মনু হয়ে জন্মগ্রহণ করেন। সমাধি বৈশ্য দেবীর বরে তত্ত্বজ্ঞান লাভ করেন এবং মৃত্যুর পর মুক্তি লাভ করেন। তবে বঙ্গদেশে সর্ব প্রথম কার্তিক, গণেশ, লক্ষ্মী, সরস্বতী সমন্বিত দুর্গা পূজার প্রচলন করেন রাজশাহীর তাহেরপুরের রাজা কংসনারায়ণ।

   নবরাত্রী ও দুর্গাপূজা

   দুর্গাপূজা নবরাত্র ব্রত নামেও পরিচিত। আশ্বিনের শুক্লা প্রতিপদ থেকে শুক্লা নবমী এই নয় রাত্র ধরে যে ব্রত, তাই নবরাত্র ব্রত। দেবী ভাগবত অনুসারে রামচন্দ্র নবরাত্র ব্রত করে দেবী দুর্গার বর পেয়েছিলেন। ঐ নবরাত্র ব্রতের পৌরহিত্য করেছিলেন দেবর্ষি নারদ। নবরাত্র ব্রতে ব্রতকারীকে উপবাস থাকতে হয়। ভবিষ্য পুরাণ অনুসারে দেবীকে প্রতিপদে কেশবন্ধন সূত্র, দ্বিতীয়া ও তৃতীয়াতে দর্পণ, সিন্দুর ও আলতা, চতুর্থীতে মধুপর্ক, তিলক ও নেত্রাপ্রজন (কাজল)। পঞ্চমীতে অঙ্গরাগ ও অলঙ্কার প্রদান, ষষ্ঠীতে বিল্ববৃক্ষে বোধন, সপ্তমীতে নবপপত্রিকা পূজা, মহাষ্টমীতে পূজা ও উপবাস এবং মহানবমীতে পূজা, বলিদান এবং রাত্রি জাগরণ করা বিধেয়। এই নয়দিনে তিলকদান, চণ্ডীপাঠ, জপ, হোম প্রভৃতি মাঙ্গলিক কার্য করা হয়। নবরাত্রির পরের দিনকে দশেরা বলে। নবরাত্রের অনুষ্ঠানগুলোর মধ্যে আগমনী, বোধন, মহাষ্টমী, মহানবমী এবং দশমী বিশেষভাবে পালিত হয়। আগমনী বলতে পতি শিবের গৃহ কৈলাস হতে পিতা হিমালয়ের গৃহে আগমনকে বোঝায়। দেবী সপ্তমী, অষ্টমী ও নবমী এই তিন দিন পিতৃগৃহে থেকে দশমীতে আবার পতির গৃহে গমন করেন। তবে ভাবুক ও সাধকদের নিকট আগমনী সপ্তমী, অষ্টমী, নবমী ও দশমীর ব্যাখ্যা ভিন্ন রকম। দেবী দুর্গা হলেন সত্ত্ব, রজঃ ও তমঃ এই তিন গুণবিশিষ্ট মহামায়া। মায়া মানবকে এই তিনগুণের বশবর্তী করে রাখে ফলে মানব অজ্ঞানতার অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়। এই ত্রিগুণের ঊর্ধে যেতে না পারলে মুক্তি সম্ভব নয়। আগমনীতে সাধকের হৃদয়ে দেবী দুর্গার অর্থাৎ শুভ-শক্তির আগমন ঘটে। সপ্তমীতে তামসিক ভাব দূর হতে থাকে। অষ্টমীতে তামসিকভাব দূর হয়ে রাজসিক ভাব প্রধান্য বিস্তার করে। অষ্টমী-নবমীর সন্ধিক্ষণে রাজসিক ও সাত্ত্বিক ভাবের সংযোগ ঘটে অর্থাৎ সন্ধিপূজার সময় রাজসিক ভাবের বিনাশ হতে থাকে এবং সাত্ত্বিকভাব উৎপন্ন হতে থাকে। নবমীতে পূর্ণ সাত্ত্বিকভাব বিরাজ করে। দশমীতে বিসর্জন বলতে তামসিক, রাজসিক ও সাত্ত্বিক এই তিন ভাবেরই বিসর্জন বুঝায়। অর্থাৎ দশমীতে সত্ত্ব, রজ ও তমঃ এই তিনগুণকে বিসর্জন দিয়ে সাধক ত্রিগুণাতীত হন। দশমীতে সাধক ত্রিগুণত্মিকা প্রকৃতিরূপা দুর্গাকে বিসর্জন দিয়ে নিগুর্ণা-ব্রহ্মাময়ী দুর্গাকে হৃদয়ে স্থাপন করেন।

   ষষ্ঠীর দিন সন্ধ্যাকালে বিল্ববৃক্ষের শাখায় দেবীর বোধন হয়। তারপর আমন্ত্রণ ও অধিবাস হয়। বিল্ববৃক্ষে বোধনের কারণ কি? বিল্ববৃক্ষকে শ্রীবৃক্ষ এবং বিল্বফলকে শ্রীফল বলা হয়। যোগিণীতন্ত্রে আছে শ্রী বা লক্ষ্মী বিল্ববৃক্ষরূপে পত্র, পুষ্প ও ফল দ্বারা শিবলিঙ্গের অর্চনা করেছেন। এজন্য বিল্ববৃক্ষকে শ্রীবৃক্ষ বলে। বিল্ববৃক্ষ হিমালয়ে উৎপন্ন হয়েছে। এ বৃক্ষ শিব ও পার্বতী উভয়েরই খুব প্রিয়। তাছাড়া বিল্বপত্রের তিনটি পত্রফলক শিব ও পার্বতীর ত্রিশূলের প্রতীক এবং এটা পূজার অপরিহার্য উপাচার। সুতরাং মূলত পৌরাণিক কাহিনী অনুসারেই বিল্ববৃক্ষে বোধন করা হয়। 

দুর্গা পূজায় মহা-স্নান

স্নান পূজার একটি বিশেষ অঙ্গ। স্নানে বিভিন্ন স্থানের জল, তৈল, মাটি, পঞ্চরত্ন, পঞ্চকষায়, পঞ্চশস্য, হলুদ প্রভৃতি প্রয়োজন। সর্বতীর্থ জল, গঙ্গাজল, সরস্বতী নদীর জল, সমুদ্রজল, পুষ্করণীর জল, বৃষ্টির জল, শিশির জল, ঝর্ণার জল, শীতল জল, উষ্ণ জল, ইষদুষ্ণ জল, কুশযুক্ত জল, শঙ্খজল, নারিকেলের জল, তিলযুক্ত জল, পুষ্প জল, মহৌষধিজল, সর্বৌষধি জল, অগুরু জল, পদ্মরেণু জল, শর্করাযুক্ত জল, চন্দনযুক্ত জল, পঞ্চরত্নযুক্ত জল, পঞ্চকষায়যুক্ত জল, পঞ্চগব্যযুক্ত জল এরকম তেত্রিশ প্রকার জল দ্বারা দেবীকে স্নান করানো হয়। তবে দেবতারা আকাশগঙ্গার জলে, মরুৎগণ বৃষ্টির জলে, বিদ্যাধরগণ নদীর জলে, লোকপালগণ সমুদ্রের জলে, নাগগণ পদ্মরেণুর জলে, পর্বতগণ নির্ঝরের জলে, সপ্তর্ষিগণ সর্বতীর্থ জলে এবং অষ্টবসুগণ চন্দনবাসিত জলে দেবীকে স্নান করান। মাতৃস্নানে সরিষার তৈল, তিলের তৈল, বিষ্ণু তৈল ও পুষ্পবাসিত তৈল প্রয়োজন। এছাড়াও মহাস্নানে গজদন্ত মৃত্তিকা, বরাহদন্ত মৃত্তিকা, বৃষশৃঙ্গ মৃত্তিকা, সাগর মৃত্তিকা, গোষ্ঠ মৃত্তিকা, নদ মৃত্তিকা, নদী মৃত্তিকা, বেশ্যাদ্বারের মৃত্তিকা প্রভৃতি প্রয়োজন। দেবীর স্নানের উপকরণগুলো থেকে এই ভাবটি প্রতীয়মান হয় যে, দেবী সর্বভূতে বিরাজমানা। দেবী সতী ও পতিব্রতা নারীর মধ্যে আছেন আবার অতি ঘৃণিত বেশ্যা নারীর মধ্যেও আছেন।

   ধান, গম, যব, মাষকলাই ও তিল এই পঞ্চশস্যের জল স্নানে প্রয়োজন। দেবী সর্ব জীবের পালিকা। তিনি ধরণীকে শস্যপূর্ণা করে জীবকে বাঁচিয়ে রেখেছেন, এজন্য দেবীকে পঞ্চশস্যের জলে স্নান করানো হয়। বকুল, কুল, জাম, শিমুল ও বেড়েলা এই পঞ্চকষায় উদ্ভদকুলে দুর্গার অধিষ্ঠানের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। স্বর্ণ, হীরক, মুক্তা, প্রবাল ও পদ্মরাগ এই পঞ্চরত্নের জলে স্নানের মাধ্যমে দেবীর ঐশ্বর্যময়ী রূপটি ফুটে ওঠে। স্নানের সময় বিভিন্ন গীত-বাদ্য পরিবেশনের রীতি রয়েছে। যেমন মালব রাগে বিজয় বাদ, ললিত রাগে বেদবাদ্য, বিভাস রাগে দুন্দুভি বাদ্য, ভৈরব রাগে ভীমবাদ্য, কেদার রাগে ইন্দ্রাভিষেক বাদ্য, বারারি রাগে শঙ্খবাদ্য, বসন্ত রাগে পঞ্চশব্দ বাদ্য এবং ধানসি রাগে ভৈরব বাদ্যের কথা শাস্ত্রে পাওয়া যায়। ঢাক, কাঁসর, ঘণ্টা, শঙ্খ প্রভৃতির বাদ্য ও বিভিন্ন রাগরাগিনী দেহের মধ্যে ঘুমন্ত কুণ্ডলিনী শক্তিকে জাগ্রত করে। ফলে সাধকের হৃদয়ে অশুভ শক্তির বিনাশ হয় এবং শুভ চেতনা জাগ্রত হয়।

   স্নানের পর দেবীকে কার্পাসেয় বা কৌষেয় বস্ত্র অর্পণ করে চরণ, কটি, বক্ষ, হস্ত, কন্ঠ, নাসিকা, কর্ণ, সীমন্ত ও মস্তক এই নয়টি অঙ্গে নয়টি আভরণ (অলঙ্কার) দিতে হয়। তারপর অঙ্গলেপনের জন্য অগুরু-চন্দনাদি গন্ধদ্রব্য অপর্ণ করে চন্দনযুক্ত পুষ্প দেবীর পাদপদ্মে অর্পণ করতে হয়। জবা ফুলই দেবীর সব থেকে প্রিয়। জবা ছাড়াও নাগেশ্বর, বকুল, কুন্দ, শ্বেতপদ্ম, রক্তপদ্ম, করবী, আকন্দ প্রভৃতি ফুল দেবীর প্রিয়। পুষ্প অর্পণের পর ধূপ, দীপ অর্পণ করে ভোগের নৈবেদ্য প্রদান করতে হয়। কালিকা পুরাণে নৈবেদ্যর যেসব উপকরণের উল্লেখ আছে তা হল ঘৃতযুক্ত শালিধানের অন্ন, মাষকলাই, মুদ্গ ডাল, তিল, পরমান্ন, পিষ্টক (পিঠা), কৃশর (খিচুড়ি), মোদক, পৃথুক (চিড়া), ধানা (মুড়কী), দ্রাক্ষা (আঙ্গুর), পনস (কাঠাল), খর্জুর (খেজুর), শ্রীফল (বেল), ব্রাহ্মী, কলসী পুনর্ণবা প্রভৃতি।

দুর্গা পূজায় বলি

   এবার বলি সম্পর্কে বিশেষ কিছু বলা দরকার। বলি অর্থ উৎসর্গ বা উপহার। বলি তিন প্রকার যথা তামসিক, রাজসিক ও সাত্ত্বিক। অহিংসা, ক্রোধ-শূন্যতা, ক্ষমাশীলতা, ধৈর্যশীলতা প্রভৃতি সাত্ত্বিক ব্যক্তির গুণ। ক্রোধ, হিংসা, অশুচিতা প্রভৃতি রাজসিক ব্যাক্তি গুণ। মলিনতা, অলসতা, দীর্ঘসূত্রীতা, নাস্তিকতা প্রভৃতি তামসিক ব্যক্তিগুণ। পূজায় প্রিয় বস্তুকে দেবীর উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করতে হয়। তামসিক ও রাজসিক ব্যাক্তির নিকট পশুর মাংস প্রিয় আহার্য্য হওয়ায় তারা পূজায় পশু বলিদান করেন। সাত্ত্বিক ব্যক্তির সাত্ত্বিক আহারই প্রিয়। তাই সাত্ত্বিক ব্যক্তি দেবীর পূজায় ইক্ষু, কুষ্মাণ্ড (কুমড়া) প্রভৃতিকে পশুরূপে কল্পনা করে তা বলিদান করেন। জ্ঞান নামক খড়গ দ্বারা ষড়রিপু নামক পশুকে বলিদানই শ্রেষ্ঠ বলিদান। 

কুমারী রূপী দুর্গা পূজা

   দেবী দুর্গাকে কুমারী রূপেও পূজা করা হয়। দেবতাদের তেজে উৎপন্ন চণ্ডী দেবী কুমারী রূপেই বিরাজমানা যদিও তিনি সতী ও পার্বতী রূপে শিবপত্নী হয়েছিলেন। মহানবমীতে কুমারী পূজা করা হয়। এক হতে ষোল বৎসরের কুমারীকে দেবী জ্ঞানে পূজা করা হয়। এক হতে ষোল বৎসরের কুমারীর মধ্যে দেবী ষোল রূপে অবস্থান করেন। দেবী এক বছরের কন্যায় সন্ধ্যা, দুই বছরের কন্যায় সরস্বতী, তিন বছরের কন্যায় ত্রিধামূর্তি, চার বছরের কন্যায় কালিকা, পাঁচ বছরের কন্যায় সুভগা, ছয় বছরের কন্যায় উমা, সাত বছরের কন্যায় মালিনী, আট বছরের কন্যায় কুব্জিকা, নয় বছরের কন্যায় কালসন্দর্ভা, দশ বছরের কন্যায় অপরাজিতা, এগার বছরের কন্যায় রুদ্রানী, বার বছরের কন্যায় ভৈরবী, তের বছরের কন্যায় লক্ষ্মী, চৌদ্দ বছরের কন্যায় পীঠনায়িকা, পনের বছরের কন্যায় ক্ষেত্রজ্ঞা এবং ষোল বছরের কন্যায় অম্বিকা রূপে অবস্থান করেন।

দুর্গা পূজা পরবর্তি বিসর্জন ও বিজয়া 

দশমীতে দেবীর মৃন্ময়ী-মূর্তি জলে বিসর্জন দেয়া হয়। দেবীর মৃন্ময়ী-মূর্তি জলে বিসর্জিত হয় কিন্তু দেবীর চিন্ময়ী রূপ সাধকের দেহে অবস্থান করে। কালিকা পুরাণ মতে শ্রবণা নক্ষত্রে দেবীকে জলে বিসর্জন দেয়া বিধেয়। বিজয়া দশমীতে কনিষ্ঠরা জ্যেষ্ঠ ও গুরুজনদের প্রণাম করে এবং তাঁদের নিকট হতে আশীর্বাদ গ্রহণ করে। প্রণাম করার সময় ধান-দুর্বা দিয়ে আশীর্বাদ করা হয়। ধান ধনের প্রতীক এবং দুর্বা একটি দীর্ঘজীবী উদ্ভিদ। তুমি ধনবান ও দীর্ঘজীবী হও এই কামনা করেই ধান-দুর্বা দিয়ে আশীর্বাদ করা হয়। 

(আমা কর্তৃক লিখিত “হিন্দুধর্মের সারকথা” নামক গ্রন্থ থেকে সঙ্কলিত)

এই ওয়েবসােইটের সকল ধর্মীয় পোস্ট  পড়ার জন্য নিচের <পোস্ট দেখুন> অংশে ক্লিক করুন

আরও পড়ুন

0 comments:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন